মায়ের আত্মত্যাগ তার সন্তানের জন্য।

আহা! লেখাটুকু দেখলেই মন ধরে যায়। মায়েরা এমনই হয়, বাচ্চাদের জন্য নিজেদের জীবন বাজি রেখে নিজেকেই মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। এমন কাজ মা জাতীর দ্বারাই সম্ভব।


ওয়েট এ মিনিট, আলোচনা হচ্ছিল তো হরিণের ফ্যাক্ট নিয়ে নিয়ে। এখানে এগুলোর কী দরকার!

আসলে বিষয়টা এমন যে, মা ও সন্তানের এই অপুর্ব কাহিনী শোনালে মানুষ আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে, পোস্টে হাজার খানেক রিয়েক্ট কমেন্ট আসে, ফেসবুকের পেজ ও বিজ্ঞানগ্রুপগুলোও মনের আনন্দেই পোস্ট শেয়ার করে।


তাহলে এতকিছু বলার কী দরকার! কাহিনী কি পুরোটা ভুয়া!


জি, ছবিটা ঠিক থাকলেও কাহিনী সেই মানুষ খাওয়ানের জন্যই তৈরী। আসুন পেছনের কিছু দৃশ্য দেখে আসি।


নিচের ছবিটি “The Stranglehold” নামক সিরিজের একটা ছবি, যেটা ফটোগ্রাফার Alison Buttigieg কেনিয়াতে ২০১৩ সালে তুলেছিলেন যার নাম ছিল 'an impala by a group of cheetahs'। ফটোগ্রাফার এলিসন এই ছবির পেছনের সত্যতা সম্পর্কে জানান।


এখানে কোনো মা impala কে শিকার করা হয় নি, বা তার কোনো বাচ্চাও ছিল না। বরং আসল সত্য হলো, মা চিতা তার সন্তানকে শিকার করা শেখাচ্ছেন!! চিতারা এই impala -কে আগেই ধরেছে, কিন্তু সরাসরি হত্যার ছেড়ে সন্তানকে শেখানোর জন্য খেলা করছিল। এখানে মা চিতা impala এর ঘাড় ধরে আছে, এবং সন্তান চিতা pouncing and tripping মতো স্কিল ট্রাই করছে। তবে impala এর শ্বাসরোধ করা হয় নি ঠিকভাবে তখন।


এখানে impala সাথে ছবিটা ৬ষ্ঠ বার চেষ্টায় তোলা। ছবিটা যদিও দেখা যাচ্ছে সেটা শান্ত, কিন্তু প্রকৃত অবস্থায় সেটা শক ও ভয়ের মধ্যে ছিল। মূলত ফটোগ্রাফার impala এর প্রতি মানুষ যেনো সিমপ্যাথি দেখায় সেরকম ছবি তোলার চেষ্টা করেছেন। আর ছবি তোলার কয়েক মিনিট পরেই মা চিতা ও সন্তানের খাবার হিসেবে পরিনত হয়।


ভুয়া তথ্যটি ছড়ানোর থেকে ফটোগ্রাফার-কে হাজারো মানুষ প্রশ্ন তুললেন। 

তিনি নাকি ডিপ্রেশনে চলে গেছেন ছবি তুলে এমন সব তথ্য।


ফটোগ্রাফার মানুষের ভুয়া তথ্যের ওপর বিরক্তি প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্টেও করেছেন - https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10212438608579521&id=1210637252


মূল ছবি- http://www.alisonbuttigieg.com/cheetahkill/


ফ্যাক্ট চেক- 

https://www.snopes.com/fact-check/mother-deer-cheetahs/


রওনক শাহরিয়ার, 

জানুয়ারি, ২০২১

আর্কাইভ

সমস্যা বা ফিডব্যাক জানাতে যোগাযোগ করুন

প্রেরণ