কাঁঠাল

 



ফলের প্রজাতিসমূহের মধ্যে কাঁঠাল আকারে সবচেয়ে বড়ো। ভারতীয় উপমহাদেশ এবং পূর্ব এশিয়াতে কাঁঠালের ব্যাপক চাষ হয়। বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কা এর আদিম জন্মস্থান। এছাড়াও গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চল ও ক্রান্তীয় বনাঞ্চল এলাকা এর ভালো উৎপাদন হয়। আমাদের দেশে সর্বত্র এর দেখা মেলে। কাঁঠাল উৎপাদনের দিক দিয়ে ভারতের অবস্থান শীর্ষে৷ এরপর বাংলাদেশের স্থান। বাংলাদেশ ও কেরালায় এটা জাতীয় ফল হিসেবে স্বীকৃত। একটা বৃহৎ আকৃতির কাঁঠাল প্রায় ৫৫ কেজিও হতে পারে। 


কাঁঠাল শব্দটি এসেছে পর্তুগিজ জ্যাকা থেকে, যা ঘুরেফিরে মলালাম ভাষার শব্দ চক (মালায়ালাম: চাক্কা পাজম) থেকে উদ্ভূত হয়েছে। তবে প্রচলিত ইংরেজি নাম Jackfruit  চিকিৎসক এবং প্রকৃতিবিদ গার্সিয়া দে অর্টা তার গ্রন্থে সর্বপ্রথম উল্লেখ করেছেন। তার কিছু সময় পর ব্রিটিশ শাসক ইউলিয়াম জ্যাকের নামে এই ফলের নামকরণ করা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম: Artocarpus heterophyllus।


বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস:

Kingdom: Plantae

Order: Rosales

Family: Moraceae

Genus: Artocarpus

Species: A. heterophyllus


কাঁঠাল একটা বহুমুখী ফল। এর কোনো অংশ ফেলে দেওয়া হয় না। কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থায় খাওয়া যায়। এর সাদা জাতীয় আঠা কাঠ সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। পাকা কাঁঠালের সার বা কোষ হিসেবে পরিচিত মিষ্টি ও রসালো অংশটি খাওয়া হয়। আটি বা বীচি রান্না ও ভর্তা করা যায়। এছাড়াও কাঁচা কাঁঠাল দিয়ে করেক রকমের পদ তৈরি করা সম্ভব। মানুষের ফেলে দেওয়া অতিরিক্ত অংশ পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এদেশে কাঁঠালের প্রচলনের সীমাবদ্ধতা থাকলেও অন্যান্য দেশে কাঁঠালের বহুমুখী ব্যবহারের জন্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গড়ে ওঠেছে।


কাঁঠালের বেশ কিছু জাত রয়েছে। এদেশের প্রচলিত কাঁঠালের জাতগুলোকে খাজা, গিলা, দোসরা জাতে ভাগ করা যায়। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র তিনটা উচ্চফলনশীল বারি কাঁঠাল-১, বারি কাঁঠাল-২ ও বারি কাঁঠাল-৩ অবমুক্ত করেছে।তাছাড়া কাঁঠাল প্রচুর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটা ফল। এতে আছে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিঙ্ক এবং নায়াসিনসহ বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদান। অন্যদিকে কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় তা মানব দেহের জন্য বিশেষ উপকারী।


কাঁঠাল সংস্কৃতির সাথেও জড়িত অনেকটা। ভারতে প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ৩০০০ থেকে ৬০০০ বছর আগে ভারতে কাঁঠালের চাষ হয়েছিল। এর কাঠের আলাদা গুরুত্ব আছে অনেক সংস্কৃতিতে। দামে কম হওয়ায় এদেশের সাধারণ ও শ্রমজীবী মানুষের কাছেও বেশ পরিচিত ফলটি। গ্রাম বাংলায় প্রচলিত আছে, ‘কাঁঠাল আর মুড়ি, হয় না এমন জুড়ি’। আবার ইচঁড়ে পাকা প্রবাদটি অপরিপক্ব কাঁঠাল পাকানো থেকে এসেছে। গ্রাম বাংলায় পান্তা, দুধ, চিঁড়া বা খইয়ের সাথে পাকা কাঁঠাল কিংবা সিজা কাঁঠাল বা সিদ্ধ কাঁঠাল খাওয়ার প্রচলন আজও বিদ্যমান। 


সোর্সঃ

১. http://www.ais.gov.bd/site/view/krishi_kotha_details/%E0%A7%A7%E0%A7%AA%E0%A7%A8%E0%A7%AB/%E0%A6%86%E0%A6%B7%E0%A6%BE%E0%A7%9D/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%A0%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AC%20%E0%A6%93%20%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A3%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BF%E0%A6%95%20%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A6%BE

২. https://en.m.wikipedia.org/wiki/Jackfruit

আর্কাইভ

সমস্যা বা ফিডব্যাক জানাতে যোগাযোগ করুন

প্রেরণ