গুগল ম্যাপসের ট্রাফিক কীভাবে কাজ করে?

 

ম্যাপসের বিভিন্ন খুঁটিনাটি নিয়ে মাঝে মাঝে প্রশ্ন আসে মনে। গুগল ম্যাপস অন করলে রাস্তায় লাল, হলুদ চিহ্ন দেখাই কেন বা রাস্তায় জ্যাম আছে কিনা বা গাড়ি আস্তে যাবে কিনা তা প্রদর্শন করে কেন! গুগল কীভাবে এই তথ্য জানে। আর তথ্যগুলো সত্যও হয় কীভাবে!

 

ম্যাপে রাস্তায় লাল চিহ্ন দ্বারা ট্রাফিক আটকে জ্যাম হয়েছে বোঝায়, হলুদ মানে ধীরগতিতে যাচ্ছে, এবং সবুজ অর্থ কোনো ট্রাফিক নেই। এর ফলে গন্তব্যে যাওয়ার জন্য রাস্তা নির্ণয়ে আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া যায়, যাত্রা সহজতর হয়। বাংলাদেশ সহ প্রায় ৯০টির বেশি দেশে এই সুবিধা চালু আছে। এখন গুগল কোন কোন উপায় রাস্তার ট্রাফিক সম্পর্কে অবগত হয় তা নিচে আলোচনা করা হলো-

 

১।

গুগল ম্যাপ ট্রাফিক ভিও এবং দ্রুতগামি পথ দেখাই মূলত দুইভাবে,

১. পূর্ববর্তী ডেটার আলোকে, যে রাস্তা দিয়ে যত গাড়ি গিয়েছে, তার একটা গড় হিসেব দেখাই, এর ফলে সপ্তাহের কোন দিন ট্রাফিক বেশি বা কম হতে পারে তা জানা সম্ভব হয়।

২. সেন্সরের মাধ্যমে পাওয়া রিয়েল টাইম ডেটার সাহায্যে ও মোবাইল গাড়ি কত দ্রুত যাচ্ছে তা নির্ণয় করে।

 

২।

শুরুর দিকে গুগল ম্যাপ ট্রাফিক সেন্সরগুলোর ওপর নির্ভর করত, যেগুলা সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রাফিক নির্ণয়ের জন্য বসিয়ে থাকে। রাডার, ইনফ্রারেড বা লেজার সেন্সরের মাধ্যমে গাড়ির আকার ও গতির তথ্য সংগ্রহ করা হয়, এবং সার্ভারে প্রেরণ করা হয়।

 

এই ডেটাগুলোর ওপর নির্ভর করে রিয়েল টাইম ট্রাফিক প্রদর্শন করে, ভবিষ্যতের প্রেডিকশনসমুহ নির্ণয় করা হয়। এই সেন্সরগুলো হাইওয়ে, এবং মূল সড়কে বেশি ব্যবহার করা হয়, অতিরিক্ত ট্রাফিকপূর্ণ এলাকায় গতিবিধি সহজে নিরীক্ষণ করার জন্য।

 

৩।

২০০৯ সালে গুগল ক্রাউড সোর্স বা মানুষদের থেকে তথ্য নেওয়া শুরু করে ট্রাফিক প্রেডিকশন ব্যবস্থা উন্নতর করার জন্য। যখনই আপনি লোকেশন অন করে গুগল ম্যাপসে প্রবেশ করেন, তখন থেকে গুগল আপনার ফোনের তথ্য নেওয়া শুরু করে। গাড়ি কতটা দ্রুত যাচ্ছে তা সেন্সরগুলো থেকে তথ্য নেয়। গুগল সকল ইউজারদের থেকে ডেটা সংগ্রহ করে একত্রিত করে, এবং তার ওপর ভিত্তি করে রাস্তায় লাল, হলুদ, সবুজ রং দেখায়।

 

৪।

এখন যত বেশি ড্রাইভার এই ম্যাপস ব্যবহার করবে নিজেদের যাতায়াতে, গুগল তত রিলায়েবল ট্রাফিক প্রেডিকশন দিতে সক্ষম হবে। কারণ গুগল ম্যাপ ব্যবহারকারী সকলের ডেটা সংগ্রহ করে গড় ফলাফল দেখায়। এতে নিদিষ্ট সময়ের পারফেক্ট নির্দেশনা পাওয়া সম্ভব। যদি গুগলের কাছে কোনো রাস্তা নিয়ে পরিমাণ মতো ডেটা না থাকে, তবে সেই রাস্তা ধুসর রঙের দেখাবে। আর ডেটা কালেক্ট সম্পর্কে গুগলের বক্তব্য, তারা পরবর্তীতে ডিলিট করে দেয়। যদিও এটা কতটা নিরাপদ এটা তা এখনও সংশয়পূর্ণ বিষয়।

 

৫।

গুগল ২০০১ সালে ১ বিলিয়নের বেশি ডলারে আরেকটা অনলাইন ম্যাপস “Waze” -কে কিনে নেয়। Waze মূলত মানুষের বলা তথ্য থেকে ট্রাফিকের তথ্য কালেকশন। ড্রাইভাররা এই অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন ট্রাফিকজনিত ঘটনা সহ এক্সিডেন্ট, বিকল হয়ে যাওয়া গাড়ি, ধীরগতিতে যাওয়া এমনকি গতি কমাতে সহায়ক বিষয়গুলো রিপোর্ট করে। এই রিপোর্টগুলো গুগল তাদের ম্যাপসের জন্য ব্যবহার করে, ছোটো ছোটো চিহ্ন দিয়ে নিদর্শন দেখাই, বা বিকল্প রাস্তা প্রদর্শন করে।

 

৬।

সরকারি, বেসরকারি লোকাল ট্রাফিক এজেন্সিগুলোও গুগলকে তথ্য সরবরাহ করে। এতে দুর্ঘটনা বা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোনো রোড অফ থাকলে জানা সম্ভব হবে। এছাড়াও গুগল সেলফোনের সাথে টাওয়ারের নেটওয়ার্কের ডিলে পরিমাপ করে, অর্থাৎ জিপিএস এবং মোবাইল ডেটা একত্রে কাজ করে ভালো ফলাফল দিতে। এতে গাড়ির লোকেশন সহ বিষয়গুলোতে সুবিধা হয়। গুগল এইভাবে ডেটা ব্যবহার করে দ্রুতগামি, কম সময়ের রাস্তা দেখাতে পারে।


সোর্সঃ

https://medium.com/@imtechpros_87395/where-does-google-maps-get-its-traffic-data-from-2562f984d82f#:~:text=The%20Answer%20Is%20Very%20Simple,picture%20of%20live%20traffic%20conditions.

https://electronics.howstuffworks.com/how-does-google-maps-predict-traffic.htm

https://www.businessinsider.com/how-google-maps-knows-about-traffic-2015-11?amp

আর্কাইভ

সমস্যা বা ফিডব্যাক জানাতে যোগাযোগ করুন

প্রেরণ